বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় TVET
শিক্ষা আমার অধিকার আর কারিগরি শিক্ষা অধিকারের মধ্যে অগ্রাধিকার। TVET [Technical and Vocational Education and Training] ই বাংলাদেশের স্বর্ণদার উন্মোচন করতে পারে। রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাশেকে উন্নত দেশের কাতারে নিয়ে যেতে পারে Training। বশ্বের যে কোন উন্নত দেশের দিকে তাকালেই আমরা দেখতে পাই সে সকল দেশের শতকরা ৫০-৬০ ভাগ লোক কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত। অর্থাৎ আমরা বলতে পারি উন্নয়নের পূর্বশর্ত কারিগরি শিক্ষা।
বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব অনুধাবন করে কারিগরি শিক্ষার বিস্তারে নানামুখী পদক্ষোপ নিয়েছেন, তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:
- স্কীলস ডেভেলপমেন্ট পলিসি-২০১১ প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন।
- দেশের প্রত্যেকটি উপজেলায় একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপন।
- সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিাটিউট ও টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ সমূহের সক্ষমতা বৃদ্ধি।
- স্কীলস ডেভেলপমেন্ট অথোরিটি গঠন।
- কারিগরি শিক্ষকগণকে দেশে-বিদেশে উন্নত প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দক্ষ করে গড়ে তোলা।
- ২০১৬ সাল হতে প্রত্যেকটি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স চালু করনসহ নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
স্কীলস ডেভেলপমেন্ট পলিসির আওতায়
- NTVQF [National Technical & Vocational Qualification Framework] বাস্তবায়নের মাধ্যমে নির্দিষ্ট পেশায় বিভিন্ন স্তরের দক্ষ জনশক্তি তৈরী।
- RPL [Recognition of Prior Learning] বাস্তবাায়নের মাধ্যমে স্ব স্ব কারিগরি ক্ষেত্রে কাজে অভিজ্ঞ লোকদের কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ সনদায়ন ও ক্রমোন্নতির দ্বার উন্মোচন।
- Under Privileged Group [পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠি] এর দক্ষতা উন্নয়ন করে তাদের উন্নয়নের মূল স্রোতধারা নিয়ে আসা।
- CBT&A [Competency Based Training and Assessment] বাস্তবায়নের মাধ্যমে দক্ষ প্রশিক্ষক ও এসেসর তৈরী করা হচ্ছে।
ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি শিল্পে NTVQF এর প্রভাব
অপরূপ সৌন্দর্যের এ দেশে ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি শিল্পের উন্নয়নের জন্য NTVQF বাস্তবায়নের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি তৈরীর গুরুত্ব অপরিসীম। সম্ভাবনাময় এ খাতের উন্নয়নের জন্য সরকার নানামুখী পদক্ষেপ নিলেও এ খাতে NTVQF এর বিভিন্ন লেভেল এ কম্পিটেন্ট গ্রাজুয়েটদের নিয়োগ ও মূল্যায়ন করা হচ্ছে না।
অথচ এ সেক্টরের এসেসর দ্বারা CBT&A পদ্দতিতে এ কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন সনামধন্য হেটেল, মোটেল এবং রিসোর্টে অধিকাংশ ক্ষেত্রে অদক্ষ ও নন সার্টিফাইড লোক দিয়ে দেশী-বিদেশী পর্যটকাদের সার্ভিস দেওয়া হচ্ছে। যা অনেকাংশেই মান সম্মত হচ্ছে না। তাই এক্ষেত্রে নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে সার্টিফাইড গ্রাজুয়েটদেরকে অগ্রাধীকার ভিত্তিতে নিয়োগের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। তা নাহলে NTVQF বাস্তবায়ন তথা দক্ষতা উন্নয়ন নীতিমালা অনেকাংশেই বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না।
খাদ্য নিরাপত্তায় TVET
খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরা একটি চ্যালেঞ্জিং বিষয়। এ ব্যাপারে সরকারের প্রশাসন থেকে নানামুখী তৎপরতা চালানো হয় যা প্রশংসার দাবীদার।
ঢাকা সিটিসহ দেশের সকল শহরে অসংখ্য খাবার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ও রেস্টুরেন্ট রয়েছে। কিন্তু এ সকল প্রতিষ্ঠান যে খাবার তৈরী ও পরিবেশন করে তা কতটুকু মানসম্মত, হাইজিন ও নিরাপদ তা প্রশ্ন থেকেই যায়। তৈরীকৃত এসকল খাবার অধিকাংশই অনিরাপদ, আন হাইজিন পরিবেশে তৈরী হয় বলে বিভিন্ন প্রতিবেদন ও অনুসন্ধানী অনুষ্ঠানে আমাদের সামনে উঠে আসে। এর মূল কারন যথাযথ প্রশিক্ষিত কর্মী দ্বারা এ সকল খাবার তৈরী ও পরিবেশন না করা।
প্রতি বছর দেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ, পর্যটন কর্পোরেশনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও NTVQF এর আওতায় বিভিন্ন ট্রেনিং প্রতিষ্ঠান হতে বহুসংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী/প্রশিক্ষণার্থী পাশ বা Competent হয়ে বের হয়। এ সকল গ্রাজুয়েটদের দ্বারা খাবার উৎপাদনকারী ও পরিবেশনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ পরিচালনা করলে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা অনেকাংশে নিশ্চিত হবে। এ ব্যাপারে যথাযথ কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ প্রয়োজন।
Engr. Kafil Uddin Bhuiya
BTEB Certified Trainer & Assessor
Chief Instructor (Tech)
Moulvibazar Technical School & College